আমাদের মাদ্রাসায় ছুটির জন্য ঘন্টা পিটানো হত না। হুজুরেরা আমাদের ছুটি দিতেন মুখে ঘোষণা করে অথবা টেবিলে বেতের আওয়াজ করে।স্কুলে এসে প্রথম ছুটির ঘন্টার সাথে পরিচিত হই। ছুটির সময় হলে ঘন্টা পড়ে।সবাই একসাথে ছুটি পায়। স্যারদের অনুমতির তেমন একটা প্রয়োজন পরে না।স্যাররা অবশ্য বলেন ঘন্টা পড়ার আগে কেউ ব্যাগ গোছাবে না।কিন্তু কে শুনে কার কথা।স্যারের এই কথাই যেন সবাইকে ব্যাগ গোছানোর কথা মনে করিয়ে দেয়
ঘন্টা পড়লে স্যারের অনুমতির তোয়াক্কা করা হত না কিন্তু মাদরাসায় উস্তাদের অনুমতি ছাড়া শ্রেণিকক্ষ ত্যাগ করার কথা কল্পনাও করা যেতো না।
ছুটির ঘন্টা ঘনিয়ে আসলে আমরা কান খাড়া করে রাখতাম।ঘন্টা পড়ার দশ মিনিট বাকি সবার কান খাড়া।কখন আসবে সেই ক্ষণ।টিং.. টিং.. টিং.... ঘন্টা বেজে উঠতেই বেঞ্চের দুই প্রন্ত দিয়ে দুই জন দে দৌড়।কার আগে কে যায়।ছুটতে ছুটতে কেউ বা আবার উচ্চ স্বরে আবৃত্তি করতো ....
ছুটি
গরম গরম রুটি।
এক কাপ চা সবাই মিল্লা খা।
সবার আগে বের হওয়ার জন্য যেমন ছিলো প্রতিযোগিতা অন্যকে পিছনে ফেলতে তেমন ছিলো নানা কলা-কৌশল। এরকম কূটকৌশল কতো জন যে প্রয়োগ করেছে আর কত জন যে এর শিকার হয়ছে তার হিসাব নাই।ধরেন কিছুক্ষনের মধ্যে ঘন্টা পড়বে আপনিও কান খাড়া করে বসে আছেন ঘন্টাও পরল আপনিও দিলেন ভো দৌড়।আপনি ছুটনেল কিন্তু আপনার ব্যাগ আটকে গেলো বেঞ্চের সাথে অথবা পাশে থাকা বন্ধুর ব্যাগের সাথে।সবাই হো হো করে হেসে উঠলো। গিট্টু গিট্টু সবই গিট্টুর কেরামতি। আপনার অজান্তেই কেউ আপনার পাশের জনের সাথে আপনার ব্যাগে গিট্টু লাগিয়েছে।এই গিট্টু খুলতে খুলতে সবাই পগারপার হয়ে যায়।গিট্টু যদি কোন মেয়ের সাথে লগতো তবে তার লজ্জার সীমা থাকতো না। জীবনে যদি প্যাঁচ বা গিট্টু লাগে তবে ঐ গিট্টু খুলতে খুলতে আপনার জীবন শেষ।সেটা যদি কোন মেয়েলি ব্যাপার হয় তবে তো...
যদি কোন দিন এই প্যাঁচ কেটে উঠতেও পারেন দেখবেন সবাই তখন বহুদূর চলে গেছে।আপনি পিছনে পড়ে আছেন।সেটা যদি আপনাকে পিছনে ফেলার উদ্দেশ্যেই করা হয়ে থাকে তবে দেখবেন আপনি অনেক অনেক পিছনে পড়ে আছেন।