শনিবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৫

ভালবাসার উষ্ণতা

কামাল ভাই!আপনার সবচেয়ে পছন্দের একটা জিনিস  আছে এতে,বলেন তো সেটা কি?সাহাবুদ্দিন  এর হাতে   একটা পলিথিনের ব্যাগ , সেটা দেখিয়ে প্রশ্নটা করল।আমার উত্তরের অপেক্ষাও  করলেন না।  ব্যাগের ভিতর থেকে একটা ছেড়া কাগজের ব্যাগ বের করল,আম্মা পাঠিয়েছেন-,ব্যাগ থেকে যেটা বের হল তার নাম- টক বড়ই -টক বড়ই আসলেই আমার খুবই পছন্দের একটা জিনিস । আমাকে  দিতে হল না । আমি নিজে থেকেই নিলাম।
-আমার জন্য ও একটা জিনিস আছে,'পড়া আলু ' -অনেক দিন খাই না, ঢাকায় লাকড়ির চুলাও নাই,আলু পুড়ে খাওয়াও হয় না।নগর জীবনের কারণে আমদেরকে কতো কিছু না কুরবানি করতে হয়-কতো মিষ্টি সকাল,কতো সোনালী বিকাল এর বিসর্জনে বিনিময়ে আমাদের অর্জন নগর-জীবন।
আম্মা জানে আমি এটা পছন্দ করি তই পাঠিয়েছেন। খাবেন?...ঠাণ্ডা তো মজাও পাবেন না। কি পাগলামি বলেন তো !...'পড়া আলু' পাঠানোর  একটা জিনিস হল নাকি?....
আপনার পছন্দ অপছন্দ সবার কাছে মূল্যহীন হতে পাড়ে কিন্তু আপনার ভালোবাসার মানুষের কাছে সেটাই মহামূল্যবান ।
সাহাবুদ্দিন আলুটা ভাঙ্গল,ঠাণ্ডা,শীতল একটি আলু,আমি কিন্তু সেই নির-উত্তাপ আলুতে পরম ভালোবাসা ও মমতার উষ্ণতা অনুভব করলাম।ছেলে ঢাকায় বসে যে আলুটা খাচ্ছে তাতে   মমতার পরশ বুলিয়ে দিচ্ছেন মা, এই মুহূর্তে যিনি শত কিলোমিটারের দূরে অবস্থান করছেন,ভালোবাসার কাছে দূরত্ব যে কতটা অসহায় সেটাই দেখতে পেলাম।

আমার এক বন্ধু সিংগাপুর থাকে,  যখনই কেউ সিংগাপুর যায় তখনই ওর মা তার কাছে কত কিছু না রেঁধে পাঠায় তার হিসাব নাই। তার পরেও বলে ঐ জিনিসটা ওর অনেক পছন্দের ছিল পাঠাতে পারলাম না রে...যদিও সেগুলোর বেশি ভাগই আমার বন্ধু  পর্যন্ত পৌঁছে না বিভিন্ন ঝামেলার কারণে। তবু ওর মা যত্ন করে  রাঁধেন  এবং পাঠান।
আমরা জানি যারা প্রবাসে থাকে তারা অনেক কষ্টে থাকেন ।তাদের মনের আকুলতা ও ব্যথা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।তাদেরকে প্রবাসে পাঠিয়ে তাদের প্রিয়জনেরাও যে কতোটা কষ্টে থাকেন তার খবর কেউ রাখে না। তাদের বুকের  কষ্ট,দুঃখ চিরকালই গোপন থেকে যায়।কবি কথা -
খড়কুটো ঘর ,বসতি বর
হাজার মায়ের ব্যস্ত শহর
কাছের মানুষ যাপ্সা হলে ঘোলাটে সংসার।
 দূরের দেশে যাদের কাছে, বন্ধক চিঠি রাখা আছে
তাদের  ঘরে, তাদের মনে রাত দিন পারাপার।।
সকাল যখন সকাল উঠে ,বরফ গলা সূর্য ফুটে
লেপের রুমে জমলে ক্রমে
শীত ঘুম অভিমান।
ঘুম ভাঙ্গা মে আদর গলায় মায়ের কণ্ঠ গল্প বলায়
শিখর আমার শিখর তখন মারে হেঁচকা টান।।
( হাফেজ্জী হুজুর রহঃ ইরাক সফর কলে তার সাথে সাক্ষাত করতে আসা শ্রমিকদের প্রতি লক্ষ করে বলেছিলেন,বাল-বাচ্চাদের আহারের ব্যবস্থা করার জন্য যারা এতো দূরে এসে কষ্ট করে কাজ করে তাদের সাথে সাক্ষাত করতে পরে নিজেকে ধন্য মনে করা উচিৎ।সেই সম্মানিত শ্রমিকদের প্রতি আমার এই লেখা উৎসর্গ করলাম।)
[আরিফুল ইসলামকে ধন্যবাদ তার সদুপদেশের জন্য, যার জন্য আজ আমি কি-বোর্ডের মাধ্যমে প্রথম বারের মত আমার  লেখা লিখলাম।এর আগে আমি অন-স্কিন কি-বোর্ডের মাধ্যমে মাউস দিয়ে লিখতাম। আল্লাহ তাকে উত্তম জাযা দান করুন]

ফিতরা

                                             ফিতরাঃ কোন মুসলিমই যেন অনাহারে না থাকে
ক্ষুধা মুক্ত পৃথিবীর জন্য দিবসের প্রতীক্ষায় থাকতে হবে না,ফিতরাই পারে এক দিনের জন্য হলেও ক্ষুধা মুক্ত পৃথিবী উপহার দিতে।
ফিতরার বিধান-ঈদের রাতে এবং ঈদের দিনে নিজের ও পরিবারের প্রয়োজনীয় খাদ্যের অতিরিক্ত সম্পদ যে মুসলমানের আছে তার উপর ফিতরা ওয়াজিব(তাফসীরুল উশরিল আখীর,পৃঃ১৩২)ফিতরার পরিমাণ-নারী পুরুষ পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের পক্ষ থেকে  এলাকার প্রধান খাদ্যের সোয়া দু'কিলো।(৬০টাকা)এই ফিতরা দিতে হবে ঈদের নামাজের পূর্বে।এ যেন খাদ্য নিয়ে ভাবনাহীন প্রত্যেকে অন্য এক অনাহারীর খাদ্যের ব্যবস্থা করে দেয়া।প্রত্যেকে ফিতরা দিলে ঈদের দিন কোন মুসলিমই অনাহারে থাকবে না।
যারা ইসলামী শাসনতন্ত্রের জন্য রাজপথে  কাফনের কাপর পড়ে নেমে পড়েন তাদের বলছি ,আগে জনতাকে বুঝান যে ,ইসলামী বিধিবিধান মানবতার জন্য কতোটা জরুরী।আর সেটার প্রথম ছবকই হতে পারে ছদকায়ে ফিতের।আমাদের দীক্ষা হতে পারে ''উপরের হাত নিচের হাত থেকে উত্তম''।আমরা দাতা হতে চাই করুণা চাই না।

শুক্রবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৫

মাদরাসা কেন বন্ধ থাকবে

বাংলাদেশ -ভারতের খেলা চলাকালীন সময় আশপাশের এলাকার মাদরাসা গুলোকে নিরাপত্তার কারণে বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
 মাদরাসা খোলা থাকলেই কি শুধু নিরাপত্তার হানী হয়? অন্য কোন প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলে কি সেই আশংকা থাকে না?
মাদরাসা বন্ধের নির্দেশ দিয়ে মূলত সরকার আমেরিকা ও তার দোসরদের ঐ কথার সাথে একত্বটা প্রকাশ করল যে তারা বলে মাদরাসা হল জঙ্গি তৈরির কারখানা
কবি বলে-
কেন ভার্সিটি আর কলেজ গুলোতে অস্ত্র গুদাম রেখে,
 সরকার কাঁপে মাদরাসা-পড়া মওলানাদের দেখে।
খেলা আগে না শিক্ষা আগে?নিশ্চয় শিক্ষা.।
তাছাড়া  স্বায়িত্বশাসিত কোন প্রতিষ্ঠানকে এরকম হুকুম জারি করা কতটা নৈতিক?যাদেরকে আপনি কোন ধরণের সুযোগ সুবিধা দেন না? যাদের সম্পর্কে আপনি  মোটেও খোজ খবরও রাখেন না
-সরকার মাদরাসা সম্পর্কে খোজ রাখে না! এটা কেমন  কথা,
-হাঁ ঠিকই শুনছেন আপনি
আপনারা হয় তো জানেন,কাওমি মাদরাসাগুলোর মক্তব ও হেফজ বিভাগ ছাড়া অন্য সব বিভাগের ছাত্রদের শিক্ষাবর্ষের রমজানের বিরতি চলছে।তার মানে মাদরাসা গুলো এমনিতেই বন্ধ আছে।বাকী থাকে হেফজ ও মক্তব বিভাগের ছাত্রদের বয়স সর্ব উচ্চ ১২-১৩।আমার তো মনে হয় না এই নিষ্পাপ শিশুদেরকে কেউ সন্ত্রাসী সন্দেহ করতে পারে।তাহলে কি সরকার বন্ধ মাদরাসা বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন! হাস্যকর ব্যাপার!
এবার বলুন,যাদের শিক্ষা বর্ষ সম্পর্কে এতটুক খবরও রাখেন না তাদেরকে কিভাবে সন্ত্রস বলে সন্দেহ করেন?তাদের প্রতি এমন জুলুমী ফরমান জারি করেন?